ডালপুরি বাংলাদেশের একটি মুখরোচক খাবার। মজাদার এই খাবারটি বিকেলের নাস্তায় চায়ের সাথে বেশি খাওয়া হয়। এটি প্রধানত ময়দা, ডাল, তেল দিয়ে বানানো হয়। রাস্তার পাশে চায়ের দোকানে এটি বেশি বিক্রি হয়। এটি ছোট বড় সবাই খেতে পছন্দ করে। বিশেষ করে গ্রামের স্কুলের ছেলে মেয়েরা টিফিনে এটি বেশি খেয়ে থাকে।
দোকান থেকে কিনে আনা ডালপুরি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। এটি খেলে পেটে সমস্যা ছাড়া আরও অনেক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ঘরেই স্বাস্থ্যকরভাবে এটি বানিয়ে খাওয়া উচিত। চলুন, তাহলে জেনে নেয়া যাক কীভাবে অল্প উপকরণে মজাদার এই ডালপুরি রেসিপি তৈরি করবেন।
ডালপুরি তৈরির প্রয়োজনীয় উপকরণ :
- ময়দা : ২ কাপ
- নরমাল পানি : ১ কাপ + প্রয়োজনমতো
- হলুদ গুঁড়া : ১/২ চা চামচ
- লবণ : স্বাদমতো
- চিনি : ১ চা চামচ
- সয়াবিন তেল : ৪ টেবিল চামচ + ৩ টেবিল চামচ
- রসুন কুচি : ১ টেবিল চামচ
- পেঁয়াজ কুচি : ১/২ কাপ
- আধাভাঙ্গা শুকনো মরিচ : ১.৫০ টেবিল চামচ
- ভাজা জিরা গুঁড়া : ১ টেবিল চামচ
- ধনে পাত কুচি : স্বাদমতো
- সয়াবিন তেল : ভাজার জন্য
পড়তে পারেন: দোকানের মতো পারফেক্ট মুচমুচে ফুচকা বানানোর রেসিপি জেনে নিন
যেভাবে ডালপুরি রেসিপি তৈরি করবেন –
ডালপুরি তৈরির জন্য, প্রথমে বড় একটি বাটিতে ১/২ কাপ মসুর ডাল নিন। এবার পর্যাপ্ত পরিমাণ নরমাল পানি দিয়ে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এবার ১০ মিনিট হলে ডালগুলো পরিষ্কার পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে নিন। এবার চুলায় একটি পাত্র বসিয়ে এতে ধুয়ে রাখা ডালগুলো দিন। এবার এতে ১ কাপ নরমাল পানি দিন।
এবার এতে ১/২ চা চামচ হলুদ গুঁড়া ও লবণ স্বাদমতো দিন। এবার এগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার ঢাকনা দিয়ে ১০ মিনিট মিডিয়াম আঁচে ডালগুলো সিদ্ধ করুন। এবার ডো তৈরির জন্য, বড় একটি পাত্রে ২ কাপ ময়দা নিন। এবার এতে লবণ স্বাদমতো, চিনি ১ চা চামচ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
এবার এতে সয়াবিন তেল ৪ টেবিল চামচ দিয়ে হাত দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার এতে নরমাল পানি দিয়ে একটি ডো তৈরি করুন। এই ডো রুটির ডো থেকে কিছুটা শক্ত হবে। এবার এই ডো ভালোভাবে মথে একটি সুতি কাপড় ভিজিয়ে পানি নিংড়ে এর উপর দিন। এবার এটি ঢেকে ২০ মিনিট রাখুন।
পড়তে পারেন: রেস্টুরেন্ট স্টাইলে ঘরোয়া মসলায় শামি কাবাব তৈরির রেসিপি জেনে নিন
এবার ১০ মিনিট পর দেখা যাবে চুলায় বসানো ডালের পানি অনেকটা শুকিয়ে গেছে। এবার চুলার আঁচ হাই হিটে করে ডালের পানি সম্পূর্ণ শুকানো পর্যন্ত রান্না করুন। এবার ডালের পানি শুকিয়ে গেলে পাত্রটি নামিয়ে ফেলুন। এবার অন্য একটি চুলায় পাত্র বসিয়ে এতে ৩ টেবিল চামচ সয়াবিন তেল দিয়ে গরম করুন।
এবার এতে রসুন কুচি মিহি করা ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১/২ কাপ দিন। এবার এগুলো বাদামী কালার করে বেরেস্তার মতো করে ভাজুন। যখন এগুলো বাদামী কালার হবে তখন এতে সিদ্ধ করা ডালগুলো দিন। এবার এগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার এতে আধাভাঙ্গা শুকনো মরিচ ১.৫০ টেবিল চামচ, ধনে পাতা কুচি স্বাদমতো, ভাজা জিরা গুঁড়া ১ টেবিল চামচ দিন।
এবার এগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার স্বাদমতো লবণ দিয়ে লো হিটে শুকনো ঝুরঝুরে হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। এরপর চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করুন।এবার ২০ মিনিট পর ডোটিকে আবারও ভালোভাবে মথে নিন। এবার এই ডো থেকে ছোট ছোট লেচি কেটে বলের মতো তৈরি করুন। এবার এগুলো হালকা ভিজানো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখুন।
এবার একটি বল নিয়ে হাত দিয়ে একটি ছোট রুটির মতো তৈরি করুন। আর রুটির মাঝখান কিছুটা পুরু রাখবেন।এবার মাঝখানে কিছু ডালের পুর দিয়ে চারপাশ থেকে মুখ বন্ধ করে দিন। এবার পুরি বেলার জন্য, সামান্য তেল দিয়ে বন্ধ করা সাইডটি নিচের দিকে দিয়ে বেলে নিন। এবার এই পুরি একটু মোটা করে বেলে তৈরি করুন।
এভাবে সবগুলো ডালের পুরি তৈরি করুন। এবার ভাজার জন্য, চুলার একটি পাত্র বসিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ তেল দিয়ে গরম করুন। এবার এতে একটি পুরি দিয়ে মিডিয়াম আঁচে ভাজুন। এবার এটি উল্টে পাল্টে হালকা বাদামী করে ভেজে তেল ঝরিয়ে নামিয়ে ফেলুন। এভাবে সবগুলো ডালপুরি ভেজে নিন।
এবার পুরি সংরক্ষণ করতে চাইলে বাকি পুরি তাওয়ায় হালকা ভেজে নিন। এরপর ঠান্ডা করে বক্সে ঢুকিয়ে ডিপ ফ্রিজে রাখুন।এবার এগুলো ৩-৪ মাস পর্যন্ত রেখে খেতে পারবেন। এই পুরি ভাজার ১০ মিনিট পূর্বে বের করে রেখে, তারপর ভাজুন। এবার গরম অবস্থায় সুস্বাদু এই ডালপুরি পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, সস দিয়ে পরিবেশন করুন।